Wednesday, 29 February 2012

ঘেঁটুকেন্দ্রিক ফাল্গুন এবং শিবারা

১.
বাউনাডোবার পাড়ে সারবাঁধা ঘেঁটুপাতারা নি:শব্দে পাঠ সারে আবহাওয়ার ফ্যাক্সবার্তা ; অথচ বাতাস ছড়িয়ে দিলে ফুলের পাপড়ি বা রেণু, শিবাদের দিনবিধির মতোই স্থির জলে পাক খায় নির্দ্বিধায় ; শিবারা পাক খায় -- সারাদিন শস্যক্ষেত সন্ধ্যায় মদের দোকান, রাতে কাঁটাবন নয়তো ...


২.
স্কুল ফিরতে যারা কোকিলডাক নকল করে কোকিল রাগায় তাদের কোনো খবর নেই বধির ঘেঁটুপাতার কাজে; যেসব ঠোঁট নামতা পড়ে, সে ঠোঁটেই গালাগালি, সে ঠোঁটেই হিন্দি ছবির গান, সে ঠোঁটেই কোকিলভ্যাঙানো অথচ সেইসব ঠোঁট কখনোই ...


৩.
ঘেঁটুগন্ধ নাকে আসলে মেয়েবৌরা নতুন খোলায় চাল কলাই  ভাজে আর পুরানো খোলাটিকে সযত্নে তুলে রাখে সংক্রান্তির জন্য, আবার মন্ত্রেতন্ত্রে ...


৪.
এবাড়িতে টেলিফোন বাজলে, থামে কলাইয়ের কড়মড় আওয়াজ ছোটো সুভাষের মুখে, গামছাবাঁধা চালভাজার ভেতর হাত পুরে চুপচাপ শব্দ শুনে, ও নাকি কানপেতে থাকে অর্জুনআড়ি রেশনদোকানে গেলে, যেখানে জনচেতনা কেন্দ্রের নাম করে ফণী কেরোসিন তেল তুলে, আর সে কেন্দ্রে চিরকাল তালা লাগিয়ে ...


৫.
বাউনাডোবার একপাড়ে ঘেঁটুপাতারা বধির নয় অন্ধ নয় তাই তারা কালার টিভি দ্যাখে, ফ্যাক্সবার্তা পড়ে অথচ অপর পাড়ে রাত্রি নামলে শিবা তার বৌকে মারধোরের কান্না শোনায়, আর একটু পার হলে দেখা যাবে কারেন্টের আলোয় মদের আড্ডা অথচ শিবাদের সামনের বাড়িতে লন্ঠনের আলোর থেকে বি.এ. পাঠরতা নন্দিতার কণ্ঠস্বর স্পষ্ট; আলোর জন্য কতবার ...


৬.
যে কোনো ফাল্গুন সংক্রান্তির সকাল কাচ্চাবাচ্চাদের টেনে নিয়ে যাবে এই গ্রাম্য কাঁচা রাস্তা ধরে, যে যে মোড়ে ঘেঁটুবুড়ির বন্দনা বা মাথাভাঙা হয়, নিষ্প্রয়োজন তোমাদের বি-টেক্স লোশন, আসলে অনগ্রসররা চিরটাকালই রামধনুর নীচে, তোমরা সার্টিফিকেটের হাত ধরে এগিয়ে যাও... এখানকার বুড়িরা বাঁশের লাঠি নিয়ে প্রস্তুত থাকবে খোস প্যাঁচড়া দাদের ছ্যাঁচড়ামো দূর করতে, এখানে রাজনীতির দীর্ঘবক্তৃতা আছে -- আর কিছুই নেই, ডোবার পাড়ে গেলেই আমি ওপাড় বা এপাড় নই, তবু একদিকের ঘেঁটুপাতা ফ্যাক্সবার্তা পড়বে, আর একদিকের ..

প্রাণস্পন্দনরেখা

অন্য কোনো পাহাড় নয়, আমাদেরই মতো সাদামাটা হাঁটাচলার ভেতর শায়িত যে দুপুর, তারই স্বপ্নসব পাহাড়ের মতো খুঁজে বেড়ায় ছাদ; পুষ্ট কিংবা অপুষ্ট যাইহোক, তবুও যারা ছাদের নীচে বাস করি, তাদের টুপুর টাপুর দু:স্বপ্নের থেকে একের পর এক খসে পড়ে রোদ্দুর, আমার স্বাসপ্রশ্বাস ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় জানালার বেশ কয়েকটি বর্গাকার শূন্যতা বা নীলাভ সাদা, হয়তো এ আকাশ ভাত ঘুমেরও শেষে অলস দাঁতে দাঁত ছুঁয়ে সরে যায় একটু একটু করে আরো; ( বিজ্ঞাপন বিরতি: আধঘুম আর অলস সন্ধ্যা, বাকপ্রতিমা-একুশ ) আমাদের সকালের সমস্ত দাহ্য পদার্থ অনেক আগেই ঘুমের পর্ব সেরে এখনো পিঁচুটি চোখে চেয়ে থাকে কালো চুলের কার্পেটের দিকে, যেখানে আঁকা হয়ে যায় প্রাণস্পন্দন রেখা, সেইসব রেখার ...


নুড়ি পাথরে পরিপূর্ণ মন কুমিরের মতো পাহাড়ের কাছাকাছি আসে আর ফিরে যায়; ফিরে যায় আমাদেরই মতো সাদামাটা হাঁটাচলা, কচি কলাপাতায় রাখা খিচুড়ির মতো মনের পর্দা ফুটো করে কারো গন্ধ   

শিরোনাম নেই

বেনেবউ আর ধুলোর পাহাড় আজ অনেকটা দূর, ডট কমের আত্মীয়তা বলতে ঘাসের থেকে শিশির গড়িয়ে পড়াও হতে পারে কিংবা তা নয়, তবুও ঢোক গিলে কেউ কেউ ( বিজ্ঞাপন বিরতি: রাতকানা আর চাঁদরঙ নিয়ে, এখন নিদাঘ ) বলে উঠবে চমকাইতলার রুপকথা, আমাদের বেনেবউরা মুখস্ত করে তৃতীয় পানিপথের যুদ্ধ, ওয়াহাবি আন্দোলন কিংবা সংবাদ প্রভাকর বা তত্ত্ববোধিনীর প্রতিষ্ঠাতাদের ইতিকথা, ঘাসেরা নীল এবং নীল, পাশাপাশি কয়েকটা পিঁপড়ে যখন অগ্রগতির লাশ বয়ে নিয়ে যায়, তখনও তারা ... 

তার মতো, আমার মতো

বাসভূমির ধারে সারবাঁধা চিত্তবেড়ার আহারময় পথে ব্যস্ত পানঢোড়া, তারই পাশাপাশি আমরা বাস করি, বাঁশপাতার বাঁশি ঠোঁটে ল্যাংটো শিশুটা কোনো অপরিচিত আনন্দে চোখ বদলায়, হঠাৎই দৌড়ে গিয়ে ঢিল ছুড়ে পরিচ্ছন্ন সাপটির দিকে, আসলে চোখের ভেতর অনেক রকম চোখ থাকে, আবার নতুন চোখের কথা ভেবে চিত্তপাতার মাঝবরাবর ফাটিয়ে আমিও ইচ্ছেমতো ক্লিক করেছি মনের সাইট-এ; ঘাটকূলের ধারে আকাশ থেকে একজট মিটালি সাপ আছড়ে পড়লে, বিস্ময়ে ছিটকে যেতাম দৈবশক্তির কথা ভেবে, কেমন কিলবিলিয়ে দৌড়ে যেত ওরা, ( একটি ছোটো বিজ্ঞাপন: লিখছি কবি, সবি, অপু ও নন্দুর প্রতি উপহার স্বরূপ ) শুকনো তালপাতার মতো চোখের পাতা যাদের, দুনিয়া ডটকমের উড়ানশৈলীকে অস্বীকার করেও তারা বুঝে নেয় টেলিফোনের রিং ঠিক কোন শোনপাপড়িওয়ালার ঘন্টাধ্বনির মতো, মাঝে মাঝে ভাবি, সবুজ সবুজ পাতায় লাউডগা সাপের মতো না হয়ে ...


শ্রবণশক্তিহীন সাপও যখন মাতালপ্রায় হয়ে আসে, তখন দু-একটা বৃষ্টির ফোঁটাও না হয় ঢুকে পড়ুক সর্পগন্ধা পাতার ভেতর, কথা বলুক প্রতিটি বৃষ্টি কণা, তবুও প্রতিটি কণ্ঠস্বর বুঝে নেওয়ার আগে, খুঁজে নেব   

অথবা চামচিকির ডানা

বাড়তে বাড়তে সময় ক্রমশ বেড়েই যায়, ধানের ঠোঁট ছুঁয়ে ঘুরে ফিরে কয়েকটা ছ্যাঁচড়া ফড়িং, ওদের ফোঁটা ফোঁটা চোখে আপাত পিছিয়ে আসার মতো কোনো কিছুই পিছানো নয়, তবু কাঁপা কাঁপা মেঘ সহ সদ্য রোয়া জমির ঘোলাটে জলে দ্রুত লুকোতে চাওয়া ছোট্ট কাঁকড়ির মতো ছুটে বর্ধমান লোকাল, উড়ে আসে পানকৌড়ি, ভেসে যায়, ( একটি বিজ্ঞাপন: এবং পাতার কান্না, ক.পা.-২০৫ ) তার আগেই স্পষ্ট ভেসে এসেছে তালবাগানের তালপড়ার শব্দ, ভুলে গেছি চশমার কথা, শুধু দেখি পানকৌড়ির ঘন কালো কীভাবে বিকেলটাকে তালরুটির মতো ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায়, তখনো গান গেয়ে যায় রেডিওর আলাপন, দেখেছিস অর্ণব তোর চশমার কাচ ট্রেনের জানলা থেকে শুষে নিচ্ছিল সবুজ সবুজ গাছ, টেরা কিংবা গোঁয়ার প্লাটফর্ম, সুদূরে ঘুমিয়ে পাটের বন, চামচিকির ডানার মতো কেউ কেউ তারই পাশে রেজা ধানজমি রুয়ে নিচ্ছে দ্রুত; আর আমি আলপাশে পিঁপড়ে বাসার দিকে ...


মৃত খেজুর গাছের চুড়োর আশপাশে ছোটো ছোটো পাখিদের উড়োউড়ির মতো ঘুমিয়ে আসে কেউ, আর জমির লাল পতাকা ধরে যারা বেরিয়েছে হাঁসের খোঁজে, তারাও অস্বস্তিতে পড়ে গোবরে পা দিয়ে, আর গোবরপোকারা 

তবুও আড়াই দিন

শেষের বিন্দু বিন্দু প্রেরণাও তোমার আমার পাড়ার লোক, আমাদের চলাফেরার গা ঘেঁষে ঘুরে বেড়ায় প্রাণের কামড়; জ্বালা পিঁপড়ের লম্বা লাইনে জিভ কেটে পা রাখা খুকুর, বেখেয়ালে আভঘেটার সময় আঁতকে উঠেও পিঁক  পিঁক ক্যালকুলেট হয়ে যায় পার্বণের হিসাব; খইঢেরার আড়াইদিন পরই শাকপুজো, ব্যস্ত মা ঠাকুমারা, সাত শাকের শরীর ছুঁয়ে ছুঁয়ে আলাদা হয়ে যায় দুপুর বিকেল সন্ধ্যা; ইস্কুল শেষে বাবু নন্দু বা মনির একপশলা বাজারখেলাকে চটকে খেতে চায় বিকেলের রোদ বা মায়ের বকুনি, কীভাবে যেন ধারাপাতও ঢুকে পড়েছে তালবোখা, কাঁচা কঞ্চিতে বানানো দাঁড়িপাল্লায়, নি:শব্দে ওজন হয়ে যায় সময়, সময়ের প্রতিচ্ছবি বা শিল্প; তসলালার ধারে ঢোলশাকের বন বুঝে নিয়েছে শিল্পের কোন শর্ত হয় না, যেনে গেছে প্রতিটি খোলামকুচির টাকায় কেনা যায় কচিকাঁচার মন, শৈশবের বেচাকেনার ভেতর ঘুরে ফিরে সাপুড়েদের ডুগডুগি আর গান, এমন দুপুর, যেখানে বিষধর সাপের পরিচয় নিতে নিতে পাড়ার মেয়েবৌরাও.....


দু-একটা কষদাঁত পারবে কি ভাজা সুশনিশাক আর পান্তা ভাতের কথোপকথন বুঝে নিতে, বুঝে নিক তার প্রেরণাও, সেসবের পাশাপাশি মুঠো মুঠো ডেনে মাছ ছড়িয়ে বেড়ায় সুস্বাদ, মুয়োনের চোখের পাতা ছুঁয়ে যে কোনো পেটমোটা ঢোড়া 

চোখে নয়, দেখা

কাউকে কাছে ডাকার আড়াল স্পর্শ করে বেঁচে থাকার আনন্দ বুঝে নিতে নিজেকে সাজিয়েছে কালিন্দীর বন, খালের জলে বেড়ে ওঠা সবুজ শরীর ছুঁয়ে উড়ে বেড়ায় প্রজাপতি, ( একটি বিজ্ঞাপন: কবির প্রতিবেশ কবিকে এভাবে কথা বলায়, আর কবি একটু অন্যভাবে নিজের মতো করে বলতে চায়, মনকে প্রশ্রয় দিয়ে নিজের মতো করে বলতে চাওয়া ভাষায় হলো কবিতার ভাষা, এইটাই ) যেটুকু ঠোঁট আকাশ পাতাল এক করে দেয়, তারই একপাশে উনান পুজো, রান্নার পর্ব সেরে এগিয়ে যায় কেউ; এখানে নালার চারপাশে বকেরা উড়ে যাবে, পানকৌড়ি এই মাঠ ছেড়েই চলে যাবে, তবুও ডেনে মাছের ঝাঁক মন ভরিয়ে দেবে কালো মেয়ের; যে আড়াল ওসামা বিন বিশ্বকে চিনিয়ে দেয়, তা কখনো স্পর্শ করে না জলের সবুজ-কালো শ্যাওলাদের, পাড়ের ঘাসে ছড়িয়ে থাকা হালকা সাদা পালক আপনমনে এগিয়ে নিয়ে মেঘেদের আলাপচারিতাকে; চোখে নয়, স্ফটিক জলের নীচে কালো কালো গেঁড়ি গুগলির আত্মরক্ষা স্পর্শ করে সবুজ জমিতে মনের আনন্দে সার ছড়ায় লাল গামছার পাগড়ি বাঁধা ......

পায়ের পাজালিতে জমা জল তাকিয়ে থাকে আকাশে উড়ে যাওয়া প্লেনের দিকে; দমদম নাকি পেন্টাগন, সেসব ইনফরমেশনস অস্বীকার করেই বেনামী ব্যাঙের আচমকা জলে লাফ, জলের কাঁপা কাঁপা ঢেউয়ে দৃশ্যের অহংকার চুরমার হয়ে 

চাইল্ড লক এবং প্রজাপতির ভ্রুণে

পাঁশকুড়ের মানপাতারা মাথা নাড়ে আবহাওয়ার নিশ্বাসে, তখন পাশে সজনে গাছে শুয়োপোকার ঢেউ নিশ্চয় বুঝে নেয় এস্ট্রলজি; অথচ লাল ঠোঁটের সবুজ টিয়ার কোনো দায় না থাকলেও সবার জানা আছে পাতা রঙের গায়ে মান মান গন্ধ ! যে গন্ধে বেমালুম পৌঁছে যেতে পারে sourav@lovers.in কিংবা কোনো হ্যান্ড টু হ্যান্ড বর্ণমালায়; আবার ব্যস্ত করতে পারে, কুঁকড়ানো লিপস্টিক বনবিতানের কোনো গাছের কোলে; অবাক হওয়ার কিছু নেই, মাউস ধরে অনায়াসেই এঁকে দিতে পারি তাকে তবে ম্যালেরিয়ার সিমটম দেখা দিতে পারে হাতে, যখন ইতুপুজোর মন্ত্রপাঠ ঝিল্লির সূচ ফোটানো মনে হয় নিদ্রালু চোরকুঠুরিকে; আর সেইসব মন্ত্র কুটকুটে শুঁয়োপোকারা বোঝে বলেই তো ...

এখন ফাইল ওপেন করলেই বোঝা যাবে, সমস্ত লগ্নকালেই ইতুর অঙ্গে চির অভিমানী মান পাতার সাথে শুঁয়োপোকার কাঁচাহলুদ সম্পর্ক হয়তো www.astrologer.com -এ ভোর বসন্তে বেলজিয়ামে গিলিদের বেমালুম গুটি বানাতে পারে গোলাপি শুঁয়োপোকারা; নয়তো নিশ্বাস বদলে গেলেই 

নামধাতু

কয়েকটা আকুল নামধাতু উড়ছিল আকাশে 
আমি স্বপ্ন পেতেছিলাম সবুজ ঘাসের উপর 
সেখানে আকাশ শুনিয়েছিল তোমার অভিমানী পায়ে নূপুরের আওয়াজ 
আমি তখন জানালার ধারে শুয়ে চাদর টেনে মুড়ে প্রাণপণে প্রতিরোধ করতে চাই 
শীত শীত কাঁপুনি - জ্বর হওয়া শীতকাল আর ... 

মেঘলা যখন

সেই তাঁত শাড়িটির নিখুঁত বুনন বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে হেঁটে যেতে পারত সবুজ সিঁড়ি ধরে, নিপুণ দুটি হাতে খুব সহজেই ধরা দিত গোলাপি সুতোরা, তাঁতকলের হলুদ সাঁকো বেয়ে মাটির গন্ধ সাজেই সেজে আসতো তারা । সার্থকতার দিনলিপি থেকে তাদের সারিবদ্ধ কণ্ঠস্বরে কতবার পেয়েছি সাঁওতালি মাদল । কিন্তু ক্রমশ ঘন রাতে ঝিল্লির বেপরোয়া গতি হঠাৎ হোঁচট খেয়ে বুঝিয়ে দেয় দ্বিখন্ডিত শাড়িটির পাটিগণিত । এখন নীরব সেলাইকলও । তাই নি:সঙ্গ হাতের প্রতিটি রোমকূপ ভাবে রাতজাগা ঘামের স্বাদ । আজ দাওয়ায় চুপচাপ বসেছিলাম তখনই হাতের প্রতিটি রেখাকে সাফ জানিয়ে দিলাম :


পারো তো প্রজাপতির সুতোয় সেলাই করে দিও শাড়িটা,আমি এখন.....   

রাতকানা আর চাঁদরঙ নিয়ে

তোমার ডিনার টেবিলে চিম্বুক পাহাড়ের বান্দারবান থেকে মারমানাচ উপহার দিতে পারতাম, এখন অনুশোচনার অঙ্ক কষি কারণ আমার জানা আছে তোমার সেই ট্র্যাডিসনাল আঙুরফল টক ভাইরাস নেই; ( একটি বিজ্ঞাপন বিরতি : ভোর লালসায় চন্দ্রভ্রমণের অপূর্ব সুযোগ, বিস্তারিত জানার জন্য : ..... ) তবে তোমার মধ্যে যে কমন ভাইরাসটির সংক্রমন আছে, তার জন্য ডা: বাসুদেব মুখোপাধ্যায়কে আগেভাগেই জানিয়ে রেখেছি; এমন আনকমন স্বীকারোক্তির কারণ : এখন পুরো ডিনার রুমটাই শৈবালদার নিত্যসঙ্গীটির চলন্ত মুখ, আমার মাথায় বেচারা টেবিলটির চারপায়ের অদ্ভূত কেশপুরিয়া লড়াই; এখন এই অবৈধ ইচ্ছাশক্তিটি মাউস চেপে ধরলেই ...


আমি নিশ্চিত জানি, দুগালে জলন্ত কয়লা মেখে ছিটকে গিয়ে মুখ গুঁজবে বিছানায়; অথচ নির্দ্বিধায় কৃতজ্ঞতা জানাব সদ্যভাঙা টেবিল-পা-কে; এখন ক্যালকুলেটর হাতে নিয়ে ধন্যবাদ কাউন্ট করতে পারে ছড়ানো ছিটানো থালা গ্লাস ; কারণ তাদের শব্দনাচ  

আধঘুম আর অলস সন্ধ্যা

সন্ধ্যার অন্ধকারে শহরের উপর মরচেধরা আকাশের রং আমার ভেতর ঢুকে সাদাপাতায় লিখে যায় স্টিফেন হকিং আমি লিখি সকাল ন-টার পাঁশকুড়া লোকাল, কয়েক স্টেশন পরপর কমলালেবুর ঝুড়ি নিয়ে কিছু হকার ..... দারুন ভালো লেবু, মিষ্টি ছিল, বলবেন...... আমি দেখছিলাম তাদের রং সান্ধ্য কলকাতার মতো, আমার আধঘুমের ভেতর পায়চারি করে বেড়ায় ট্রেন চলার অদ্ভূত শব্দ হঠাৎ কোথায় যেন ( বিজ্ঞাপন: রাতকানা আর চাঁদরঙ নিয়ে, এখন নিদাঘ ) থেমে যায়, টকটক চিৎকারের পর আবার চলতে শুরু জানি সিগন্যাল পোস্টে হলুদ আলো আসবে না আমার সাথে, আসবে কমলা সূর্যটি, আমার ছায়ার ভেতর হামাগুড়ি দেয় হলুদ বাল্বের কথাবার্তা, তবু আমাকে ভাবতেই হবে, সেই .... 


দু-চোখে অলস প্রজাপতি বা ফুল, কোথাও কোনো ব্যাঙ নেই যে ডেকে উঠলে বুঝবো বর্ষা আসতে পারে, বৃষ্টি হলে শহুরে গাছের কালোপাতারা সবুজ হয়ে যায় তখন সন্ধ্যার অন্ধকারের ভেতর 

কান্নায় ফিরে আসা

উসুয়াইয়ার যে প্রান্তে জোড়া জোড়া ছেলেমেয়ে বসবাস করে তাদের কাছে মেঘ কখনোই পাশবালিশ নয়; আবার সৃষ্টির উৎসমুখে যে মেঘ বারবার আছড়ে আছড়ে পড়ে, তাদের ভেজা কণ্ঠস্বর আমার ভোরঘুমে ঘোষণা করে যায় কৃষ্ণপ্রেম পুরানো হয়ে গেছে, ( বিজ্ঞাপন: লিখছি, আমার প্রেমিকার প্রতি উপহার স্বরূপ ) তাই খামখেয়ালি সময়ও বুঝে নিয়েছে   ধোঁয়ামেঘ আমাদের সিগারেটের ধোঁয়ায় নির্মিত, ভালোবাসা আর যৌনতার ভেদরেখা টানার অক্ষমতার পাশাপাশি, হাঁটতে ভালোবাসি আমাদের গ্রামে নতুন মোরামপথ ধরে, সবুজ দুপাশে পছন্দের চোখ থেকে অন্যপথে ভেসে আসে পরিচিত ডাক, শিমূলডালে বসে একটি কোকিল একনাগাড়ে গালাগাল অভ্যাস করে চলেছে; তবুও মায়ের কোলে শিশুর কান্নায় ভরে উঠছে চারদিক, ভালোবাসার পরিবর্তিত রূপ; এবার আমার হাতের তালুতে গজিয়ে উঠবে নতুন কোনো ...


সবকিছু যেমন মিলেমিশে এক হয়ে যায়, তবুও অণু থেকে পরমাণুর দিকে এগিয়ে যাওয়া, প্রেমের আবর্তে ঘুরেফিরে আসা চোখ, তবুও অন্যরকম চোখ, শুধুই চেয়ে থাকা; ভালোবাসার সংগায় স্বপ্নঘন চোখের প্রত্যেক তারার 

মুখ কিংবা মধুচন্দ্রিমা

শেষদুপুরে মেঠো পথ ধরে আসার সময় বাগানে সারবাঁধা অশ্বথ্ব গাছদের মনে হয় কোনো ক্লান্ত যুবকের মতো চাকরির চিঠি হাতে ঝিমিয়ে আসা মুখ; আমিও ঝলসানো মুখ ফিরিয়ে আপনপথ ধরি, দুধারে স্বপ্নের মতো খাপছাড়া ধনচেগাছ; মুখ তুলে তাকালে সামনেই দিগন্ত অথচ সামনে নয়; মৃদু বাতাস কাঁপিয়ে কোনো অবিবাহিতা পাশ কাটিয়ে গেলে, একটু দেখতে ইচ্ছা হয় ভাগ্যবতীদের, বাপমায়ের দুশ্চিন্তা ও আদরে পুষ্ট যৌবন, তারপর কপাল ফাটিয়ে মধুচন্দ্রিমার দিকে, যৌতুক শরীর হৃদয় দিয়ে স্বামীকে সাজিয়ে .... আমরা প্রেমিকার যোগ্য স্ত্রীর যোগ্য নই; স্বামীর যোগ্যতা অর্জিত হলে ভাগ নিও প্রত্যেকটি রাত, চিন্তাহীন ঘুম, তারপর অবৈতনিক দাসীর সাথে নিজের লীন মিলগুলি খুঁজে খুঁজে ...


শীত গ্রীষ্ম বর্ষার একেকটি দুপুর আমার কাছে একেকভাবে আসে, আজ হয়তো   

কথাকলির কানে কানে


প্রিয় পাঠক,
আমাদের এই পরিষেবার আপ-গ্রেডেসন চলছে.
কবিতা গুলি সম্পূর্ণ রূপে পেতে দয়া করে কিছুদিন অপেক্ষা করুন.


অনিন্দিতা রায়  

ডানায় ডানায় অন্য

না অন্য কোনো ভ্রম নয় সলজ্জ দুপুরের ঠোঁট ক্রমশ আড়াল করে নেয় নিজেকে ..............
কাজ চলছে , দয়া করে অপেক্ষা করুন  

দুপুর দুপুর ভ্রম

ফিরিয়ে নিও এলোমেলো ঘাসেদের সাদামাটা কথোপকথন চেয়ে দেখ ঝাড়ের লম্বা লম্বা বাঁশ জড়িয়ে ঐ যে সবুজ লতানে গাছ ওসব আসলে পুরুল যখন বহুবার বুড়োবুড়িদের কুচকানো কণ্ঠস্বরে চাপ দিয়ে খোলা হয় বৃদ্ধাশ্রম তখনও ওর পাশ দিয়ে ভিখ মেগে ফেরে নূরবিবিরা তাকিয়ে তাকিয়ে ভাবে চোখের আড়ালে ওরা বাড়ছে আসলে যে যার নিজের মতো করে বড় হয় সত্যিই ওরা বাড়ে সরু লিকলিকে শরীর ছড়িয়ে সবের উপরে উঠে যায় অথচ সন্ধ্যার লেবু গন্ধের ভেতর জোনাকপোকার মতো নৌকাডুবি খেলে না কেউ বরং গোল অষ্টমীর দিন মা ঠাকুমারা ব্যস্ত থাকে পুকুরে পোঁতা বাঁশের উপর শালুকমালয় ঝিঙে পুরুল পুজো করতে যেসব গোয়ালপুজোয় দুপুর কেবলই এড়িয়ে যায় বিশ্বের তৃতীয় কান্নার পূর্বাভাস সেথায় কাস্তের ধারে টুকরো টুকরো ঝিঙেছেদের মতো তারুণ্যের গোটা গোটা ইচ্ছাসকল সেসবই ভাবি আজ ( বিজ্ঞাপন: প্রিয় জয়দেবদাকে ) চেয়ে দেখি ডোবার পাড়ে হোপামাঁচায় ঘোরেফেরে ফড়িং কয়েকটি প্রজাপতি এলোমেলো আসলে ভাবনাও সব এলোমেলো তবুও ওরা ...

বৃষ্টির আগে যেসব কণ্ঠস্বর আমাদের চারপাশে নিয়মিত ঘুরে ফিরে তারা ঝিলের আশপাশে বকেদের আইলিড ছুঁয়ে ছুঁয়ে নূরবিবির স্বামী আর সন্তানের সংখ্যা কষে মজা পায় আসলে আল্লার দোহায় দিয়ে  

Tuesday, 28 February 2012

এক রোদ্দুর দুই চূড়া

ভেজা মনের দৃষ্টি সেঁচে মাছ ধরার অবকাশে তোমায় বেড়িয়ে 
আসতে দেখেছি শূন্য মাঠে শূন্য আকাশের নীচে আমায় সঙ্গে নিয়েছ 
সেভাবেই সেসব ঠিকরে পড়ে চোখের কোণ ঠেকে আর চোখের 
পাশাপাশি তোমাকে আমাকে আশ্রয় বুঝিয়ে দেয় ঋষিকেশ পার্ক 
( একটি বিজ্ঞাপন: লিখছি শুধু তোমারই জন্য শুধু তোমাকেই ) এ 
হাতের তালু ছুঁয়ে তোমার হৃদয় গাছেদের চূড়ায় চূড়ায় ঘোরেফেরে 
আর বুঝিয়ে দেয় আকাশ শূন্য হোক তবুও সুর্য আমাদের থেকে 
আলাদা নয় আমরা বেঁচে থাকি একে অপরের দিকে চেয়ে কৃত্রিম 
পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে জড়ানো রোদ্দুর পাতাঝরার দৃশ্যের দিকে 
চেয়ে বুঝিয়ে দেয় ঘুরপাক বৃত্তান্ত  পাশের মাঠে ক্রীড়াসহযোগী 
ফুটবলের মতো ঘুরপাক খায় হাতঘড়ির কাঁটা পেঙ্গুইনের গন্ধমাখা 
চোখ পাক খায় নিক বেকারের ভ্রূযুগলের নীচে সে চোখ 
রামমোহনের নেই আছে কি বরং ঠনঠনিয়া পাম্পিং স্টেশন 
কর্তৃপক্ষের সাজানো অহংকারে চুপচাপ তাকিয়ে থাকে বেচারা 
দুচোখে মেয়ে পোড়ার আগুন আর ছাই না হওয়া ...


যে বিন্দু স্পর্শ করে ভুলে যাই গোঁয়ার রাস্তাঘাটের কথা সেখানে 
বৃষ্টির আগে সত্যি হাঁচি হেঁচে শুধু শক্ত করে নেওয়া সামনের পথ 
আর দূরদৃষ্টির সাদামাটা জটিলতার জাল ছিঁড়ে পরপর বুঝে নিতে 
হয় 

খোঁজ কিংবা

হারিয়ে  যাওয়া  গোপনতাকে খুব  সংগোপনে খুঁজতে খুঁজতে পাওয়া 
গেলে    গরম   নিশ্বাসের  খোঁজ, কখনো  এড়াতে  পারি   না  কেবল 
তোমাকেই, ভুলে যেতে হয় পুরানো ঝরাপাতার স্বাদ অথচ তোমারই 
মতো   বাতাসের  বেগ   ধরিয়ে  দেয়   সতর্কতার   বুনোপথ,  সেসব 
প্রয়োজনীয়তাকে  স্বীকার  করেই খুঁজে  পাই  শুধু  তোমাকেই  অথচ 
গোপনীয়তার নোটবুক সে সময় থেকে আজও .....


এভাবে  ভাবলে  সব  যেন   কেমন  গোলমেলে ঠেকে অথচ পরিস্কার 
জানি 

যেথা টুনটুনি, সবুজ নখ

ঝিল্লি আর ব্যাঙের হলুদ কণ্ঠস্বর মাড়িয়ে সাদা কার্পেটে আঁকা হয়ে যায় 
রঙিন হারমোনিয়াম, সবার মনের কার্পেট এক নয়, তাই আলোর 
সামনে চিরকাল  ঘোরাঘুরি করে ( একটি বিজ্ঞাপন: ... রেখেছি 
আমার ভালোবাসার ডাকনাম অনি ) কিছু পিঁপড়ে কিছু বাদলপোকা, 
আর রাতের অন্ধকারে ভেজা ঘাস কিংবা আঁশটে আঁকড়ফল চুপচাপ 
হিসেব কষে যায় সারাদিনের, গাছের নীচে ঘাসের উপর বেলেল্লা 
কেঁদরাই-এর ঘোরাঘুরি, বাঁশের খুঁটির পাশে ঝুলে থাকা খড়ের বুকে 
আপনমনে গেঁথে যাওয়া বাসা সেই টুনটুনির, তার কণ্ঠস্বর জিদের 
হিসাব কি মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের মতোই ওয়েবসাইটে... সে 
সংবাদ ভ্রূক্ষেপ না করেই ওর জীবনযাত্রা এগিয়ে যায় পিচ্ছিল 
দূর্বাপথ ধরে, সারারাত মনাবাগদিরা ঝিলে ঝিলে ঘুরে বেড়ায় 
পোলুই হাতে, তবু লতানে বন চুপচাপ শুনে যায় খেজুর পড়ার 
কবাং কবাং আওয়াজ, যে কেউ যে কোনো পদশব্দের স্বাদ বিচার 
করুক, হয়তো কচুঝোপের  ভেতর থেকে ডেকে উঠবে ডাকপাখি, 
এখন ক্যাঁকরকাল্লা নয় তবু বাতাসে ভেসে বেড়াক বনকুঁদরির ঠোঁট, 
আমার ডিটিপিময় ঠোঁট লিখে যাক বজ্রপাতের মতোই কিছুকিছু 
সুস্বাদু কড়কছাতুর...


অলস লম্বাচুলের এক্সরে রিপোর্ট পড়তে জানে না টুনটুনির 
বাঁকাঠোঁট, তার ফুড়ুৎ-ফুড়ুৎ আসা যাওয়া আর একটি কালো 
তেঁতুলবিচির সবুজ নখ আঁচড় কেটে যায় অসুস্থ কবির বুকে, তবুও 
তো এক বাতাসি মেঘ, একখানা অন্ধকারকে  

Monday, 27 February 2012

সেইসব মৃদু বাতাসের

মৃদুবাতাসের প্রতিটি অক্ষর বয়ে নিয়ে বেড়ায় সাদা কিংবা কালো 
ধোঁয়ার কানাঘুসো, কেউ কেউ বুঝিয়ে দেবে খোল-খঞ্জনির হৃদয়স্বর, 
আমি চুপচাপ ভেবে যাবো স্থির বনবিতানের সবুজ ঘাসঝোপের 
ভেতর অস্থির নড়াচড়া সদাসতর্ক হলুদ পোশাক ভালোবাসার 
পায়্চারিতে কখনোই বাধার বাসা বাঁধতে দেয় না অথচ নর্দমাক্ত 
সম্ভ্রান্ত ভিকারিনি মাটি ঘাসের গন্ধচাহিদা মাড়িয়ে তুলে বেড়াবে 
তোলা, স্বল্প প্রাপ্তিকে ছুঁড়ে ফেলে শুনিয়ে যাবে গালাগাল একটা 
সাদা মেঘ বনবিতানের মাথার উপর দিয়ে খুব ধীরে সূর্যকে হৃদয়ে
ধরে উড়ে যায় ( বিজ্ঞাপন : মুখ কিংবা মধুচন্দ্রিমা, ক.পা.-২০০ ),
সঙ্গে নিয়ে যায় তবলার প্রতিটি তাল, ব্যান্ডের গান, সুমন-অঞ্জন 

থেকে ভূমি ক্যাকটাস কতকিছুই, চলে যায় কিন্তু কত দূর, চলে 
যাও.... যতদূর কিন্তু রেখে যাও ...


সদাসতর্ক মাটি, সাদা মেঘ, তবলা, ব্যান্ডের গান সবকিছুই, অথচ 
কবিতার গন্ধমাখা একটি গেরুয়া রঙের ঘোড়া সেসবের ভেতর 
দিয়েই একটা অদ্ভূত নি:শ্বাস ছেড়ে   

অবাধ ছায়ায় ছায়ায়

প্রতিটি  দুপুর  জানে   বটের   তলে   পাতাদের   ছায়ায়   ছায়ায় 
আত্মঅপহরণের সবুজ বাতাস মাড়িয়ে হেঁটে যায় রাখাল বাগাল, 
কারো কারো পাতালুকানো খেলা, কারো ঘসিমখেলা, ভেল কিংবা 
লুলুরা ঝুরি ধরে বটের ডালে উঠে  পাখিদের চেঁচামেচি খুন করে, 
দোল খায়, ( বিজ্ঞাপনটি দেখুন: পেঁচা কিংবা কাচের চুড়ি, ক.পা.
-২০১ ) আর উটকো খেয়ালে ঝপাঝপ জলে লাফ, চলে জলখেলা, 
সে খবরও দুপুরের  কাছে  থাকে অথচ  সেই বাবলাডাঙ্গার থেকে 
ঠা-দৌড়ে বেচারা টাইটু-ই শুধু বলে গেলো মনাগয়লা তার তিলজমি 
থেকে কার  ছাগল খোঁয়াড়  নিয়ে গেলো,  কয়েকটা কাঠ-পিপড়ের 
বোবাকণ্ঠস্বর   অস্বীকার করে  মাটির আঁশ কিংবা গাছের আঁশটে 
গন্ধকেও, সদ্য মাটিফোঁড়া  তালচারার   মাথায় একটা লাল ফড়িং 
গোগ্রাসে গিলে খায় দুপুরটাকে, হেথায় রবীন্দ্রসদন নেই, নন্দন নেই, 
অথচ  একটু  দূরেই  মন্তাঝোপে  আর্টপেপার   পেতে  বসেছে  একটি 
মাকড়সা, দিনযাপনের স্বপ্ন ফাঁদে চুপচাপ ঠিক ঐ দুলেবৌদের মতো 
সকালে চাটুনিজালের পর্ব শেষ, এখন সারের ঝোড়া নিয়ে ...

যে দুপুরে ভোটপ্রার্থীদের মতো  দুটো পাঁঠার মাথায়   মাথায় লড়াই, 
সেখানেই বটপাতারা আশ্রয় দেয়, সাদা তিলফুলের উপর ঘুরেফিরে 
কিছু   কর্মী   মৌ,    বাতাস  কারো  আঁচলের  মতো  ছুঁয়ে   যাবে 
ছেলেপিলেদের, কয়েকটা ঘাসফড়িং  

এবং পাতার কান্না

শিশুর কান্নায় কাঁপা কাঁপা বাতাস পারবে কি নির্বাচনী প্রচারের 
চিৎকার চেঁচামেচিকে এড়িয়ে বয়ে যেতে কুসুমডাঙার মাঠ, যেতে
হলে আনন্দে কাঁদিয়ে দিয়ে যেও, উড়িয়ে নিয়ে যেও কলকাতার 
পোশাক, পাতার পোশাকে লিখে দেব ভালোবাসার কথা, চুপচাপ পাঠ 
সারবে ধানের চারা আলের ঘাস, তাহলে ঠিক কী নিয়ে যাবে সাথে 
কিংবা নিয়ে আসবে ঝড়ে, মৃদুমন্দ বাতাসে নয়, ঝড়েরএক হ্যাঁচকায় 
নস্যাৎ করে দাও যৌনতার চ্যানেল, প্রেমচাঁদ বড়াল স্ট্রিটের 
অমেয়েদের ব্লাউজের হুক শক্ত হোক ( বিজ্ঞাপন বিরতি: ইচ্ছা আবেগ 
কল্পনার সাথে বাস্তবের একটা সাদৃশ্য খুঁজতে চেয়ে ভালো লাগা বা
 আনন্দ পাওয়ার নামই কবিতা ... ) কুসুমডাঙার মাঠে সবুজ আলে যে 
সমস্ত কালো মেয়েরা কাস্তে হাতে বিশ্রাম নেয় কখনো, তাদের বুঝিয়ে 
দিও কলকাতার শিশুর কণ্ঠ শিশুর মতোই, এখানে মাটির কোনো 
রং নেই, শুধু এড়িয়ে যেতে চাই ...

মায়ের বুকে শিশুর কান্না ভেসে বেড়াক বাতাসের কণায় কণায় ভর 
করে, সুন্দরী প্রতিযোগিতায় হেঁটে বেড়ানো পাতার পোশাক পরা 
মেয়েটিকে এসি মেশিন কি বোঝাতে পারবে সোদা মাটির স্বাদ, ইচ্ছা 
হলে হৃদয়টাকে যদি   

সবুজ কিংবা টাক বিষয়ক

জলসরা বালির উপর বিমানপথের গ্রাফ আঁকছে যে কাঁকরগুলি, তারা 
জানে এখন বর্ষার গায়ে রাত রাত গন্ধ এই রাতে কারো কারো মুখ 
ফুলবড়ি হতে পারে অভয়ারণ্যের প্রাণীদের সেন্সর রিপোর্ট দেখে আবার 
গাঁয়ের ঘেঁচা-পাঁচাদের চামড়ায় গ্যাঙর গ্যাঙর গন্ধ কিংবা ময়ূরপেখমরঙ
মাখা ছারপোকার গন্ধ নলবন থেকে বিছানা সর্বত্রই এমন সময়েও 
গোলাপস্বাদ সংস্কার বিষয়ে আমরা থাকি ঠুটো ব্যস্ত থাকি কনকর্ডের 
দুরকম বিস্ময়ে ; আর, কয়েক বছর পর সেন্সর রিপোর্ট প্রকাশ পেলে 
হয়তো ... 
কী জানি, সকাল হলে ছাঁচতলায় জটলাবাঁধা abcd গুলির যে গবেষণা
চলবে কাঁকরদের প্রাণ নিয়ে তার গন্ধ এমনই থাকবে, নাকি   

Tuesday, 21 February 2012

হার্ডডিস্ক বা আঁতুড়ঘর কথা



গ্রামে ফিরে দাওয়ায় চুপচাপ বসে থাকলে ব্রেনের হার্ডডিস্কে যেসব ইনফরমেশনস ফাইল হয়, মাঝে মাঝে ভ্রূদ্বয়ের মাঝবিন্দুর ভেতরকার স্ক্রিনে তাদের নিয়ে ক্রিকেট খেলতে বেশ ভালোই লাগে; বেটিং বিষয়ে সবাই যখন ব্যস্ত তখন তাদের পাশে সরিয়ে গ্রাউন্ডে নেমে পড়ে সেই লাল বোলতাটিও, সে আপনমনে কোথায় যেন উড়ে যায়, আর ফিরে এসে সো-জা কপাট কোণে, ইচ্ছে হলে সাগ্রহে দেখি তার অবাক করা আঁতুড়ঘর নির্মাণ, কেমন ব্যস্ততায় আঁশের মতো ডানা নেড়ে সুদক্ষ কাঁথমিস্ত্রী হয়েই ...., ওদের ফিনফিনে ডানার থেকে যেটুকু বাতাসের প্রাণসঞ্চার হয় সেটুকু বাতাস যদি পাঠানো যেত কোনো গর্ভপাতকেন্দ্রে তাহলে কোনো ছুরি কিংবা কাঁচির ক্যাঁচকুঁচ কান্নার আগেই লজ্জায় কুঁকড়ে যেত অসংযত লজ্জাবতীরা, আর এই পোকাটির মাতৃত্বের রসে হত মাকড়সা বা পিঁপড়েরাও হয়ে যায় ওদের সন্তান; জানি আমাদের মত আমাদের সন্তানেরাও ভেঙে দেবে ওদের মাল্টিস্টোরিড আঁতুড় বাড়ি, এশিয়ান পেন্টস লাগানো সেই দরজা দিয়েই আসবে নববধু কিন্তু তার আগে ... তোমার ফোনটা আসলে ডোবার পাড়ে ডেকে দেখিয়ে দিতাম বাঁশপাতা পচা পাঁকের থেকে বোলতাটি বিন্দু বিন্দু কাদা ঠোঁটে নিয়ে কেমন... অথচ রিং শুনে ভ্যাবলা হতে হয় প্রথমে টেলিফোনে তারপর টিভির স্ক্রিনে চোখ রেখে -- এমনটাতো কলকাতাতে প্রায়ই হয়, পাঁকের ভেতরকার ঘুরঘুটেদের টাঙ্গা হাতে মেছো ছোকরার  দ্বারা সদগতি হয় জানি কিন্তু মস্তিস্ক মধ্যস্থ অস্বস্তির ভেতরকার ঘুরঘুটেদের জন্য অথচ ... 
সিলেকসনে বাদ পড়ে যায় কেউ; কেউ আবার মাঠে নেমেও     
ক্যাচ বা বোল্ড কিংবা রান আউট, হয়তো মাঠে নেমেও কারো বদল ঘটে -- আমার তো এমনই মনে হয়, যেমন এখন মনে হচ্ছে আঁতুড়ঘর অর্থাৎ কোনো   
 . 

সাদা তাজমহলের লাল গন্ধ

সাদা তাজমহলের নিপুণতা বিস্ময়ের পথ ধরিয়ে দিতে পারে । সে পথেই হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ করেই গা গুলিয়ে ওঠে ওর লাল গন্ধ নাকে আসলে, উগরে দিতে ইচ্ছা করে বদহজম হওয়া শাহজাহানের ভালোবাসার বিস্ময় , অভক্তিতে গলা ঠেলে বেরিয়ে ওস্তাদ ঈশার টকগন্ধযুক্ত কৃতিত্ব। দক্ষতাপূর্ণ কারুকার্যের শরিক পৃথিবীর অন্যতম আশ্চর্যের ইতিহাস যদি গোলাপি হয় -- তবে সবুজ মন তো চাইবেই সাদা শরীরের থেকে গোলাপি পুষ্পগন্ধে চুমুক দিতে ! সেভাবেই মাতাল হয়েছিলাম , বুঝিনি যে গোলাপি পুষ্পগন্ধের ভেতর থেকে লাল গন্ধ বেরুবে -- যে গন্ধে মিশে আছে ঈশার ভয়ঙ্কর আদেশ , অসংখ্য শ্রমিকের ক্লান্ত তবু বাধ্য রক্তাক্ত দুটো হাত , লাল দুটো চোখ , চাবুকের ঘায়ে ঝরে পড়া লাল রক্ত -- আরো গভীর কত কিছু !
তাজমহলের সমস্ত সাদা মারবেল তাই আস্তে আস্তে হলুদ হয়ে যাচ্ছে 

উৎসর্গ

উৎসর্গ  সমস্ত কবিতাপ্রেমীদের 

প্রকাশনা তথ্য

প্রকাশনা তথ্য 


প্রথম প্রকাশ : জানুয়ারি ২০০২ । মাঘ ১৪০৮ 
দ্বিতীয় প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২০১২ ফাল্গুন ১৪১৮ 

প্রচ্ছদ

প্রচ্ছদ